আজকের দিন: আরাফা ও জুমা—দুটি বরকতময় দিনের মিলন
ভূমিকা
ইসলাম
ধর্মে
এমন
কিছু
দিন
রয়েছে,
যেগুলোর ফজিলত
ও
মর্যাদা অপরিসীম। আজকের
দিনটি
তেমনই
একটি
বিশেষ
দিন।
কারণ
আজ
একই
সাথে
এসেছে
জুমার
দিন
এবং
আরাফার
দিন।
উভয়
দিনই
আলাদা
আলাদা
ভাবে
অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ, আর
একসাথে
হলে
তার
গুরুত্ব বহুগুণ
বেড়ে
যায়।
এই
পোস্টে
আমরা
আলোচনা
করবো
এই
দিনের
গুরুত্ব, আমল,
দোয়া,
কুরআন
ও
হাদিসের আলোকে
কী
করণীয়
এবং
কীভাবে
এই
দিনটি
সর্বোত্তমভাবে কাটানো
যায়।
আরাফার দিনের ফজিলত ও গুরুত্ব
১. ইসলামের পূর্ণতা
এই
দিনে
মুসলমানদের জন্য
আল্লাহ্ ইসলামের পূর্ণতা ঘোষণা
করেছেন। কুরআনে
বলা
হয়েছে:
"আজ আমি তোমাদের
জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।"
— সুরা
আল-মায়েদা, আয়াত ৩
এই
আয়াতটি
আরাফার
দিন
নাজিল
হয়েছিল। তাই
এই
দিনটি
ইসলামের ইতিহাসে চিরস্মরণীয়।
২. হজের মূল রোকন
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন:
"হজ হলো আরাফা।"
— (তিরমিযি, হাদিস:
৮৯১)
এই
হাদিস
থেকে
বোঝা
যায়,
হজ
পালনের
মূল
ও
কেন্দ্রীয় অংশ
হলো
আরাফার
ময়দানে
অবস্থান করা।
৩. গুনাহ মাফের সুবর্ণ সুযোগ
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন:
"আমি আশা করি, আল্লাহ্
আরাফার দিনের রোজার বিনিময়ে এক বছর পূর্বের ও এক বছর পরের গুনাহ মাফ করে দেবেন।"
— (সহিহ
মুসলিম,
হাদিস:
১১৬২)
এই
ফজিলত
শুধুমাত্র যারা
হজে
নেই,
তাদের
জন্য
প্রযোজ্য।
৪. আল্লাহর নিকটত্ব অর্জনের দিন
আরাফার
দিন
আল্লাহ্ তাঁর
বান্দাদের প্রতি
অত্যন্ত দয়াশীল
হন
এবং
বিপুল
সংখ্যক
মানুষকে জাহান্নাম থেকে
মুক্তি
দেন।
"আল্লাহ্
এই দিনে তাঁর বান্দাদের সবচেয়ে বেশি জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন।"
— (সহিহ
মুসলিম,
হাদিস:
১৩৪৮)
জুমার দিনের ফজিলত ও গুরুত্ব
১. সাপ্তাহিক ঈদের দিন
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
"সপ্তাহের
শ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমা। এই দিনে আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিনেই তিনি জান্নাতে প্রবেশ করেন এবং এই দিনেই জান্নাত থেকে বের করা হয়।"
— (সহিহ
মুসলিম,
হাদিস:
৮৫৪)
২. দোয়া কবুলের বিশেষ সময়
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন:
"জুমার দিনে একটি বিশেষ সময় আছে, যখন কোনো মুসলমান
বান্দা দোয়া করলে তা অবশ্যই কবুল হয়।"
— (সহিহ
বুখারি,
হাদিস:
৯৩৫)
আজকের দিনে দুটি ফজিলত একত্র
আজকের
দিনটি
অন্যান্য দিনের
তুলনায়
অধিক
বরকত
ও
রহমতের। কারণ:
- এটি হিজরী বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ
দিন।
- এটি একই সাথে আরাফা ও জুমার দিন।
- গুনাহ মাফ, দোয়া কবুল এবং জান্নাতের
দরজাগুলো আজ উন্মুক্ত থাকে।
করণীয় আমল সমূহ
১. রোজা রাখা
এই
রোজা
পূর্ববর্তী ও
পরবর্তী এক
বছরের
গুনাহ
মাফের
কারণ
হতে
পারে।
২. জুমার নামাজ ও খুতবা
খুতবা
মনোযোগ
সহকারে
শোনা
এবং
সুন্দর
পোশাকে
আগেভাগে মসজিদে
যাওয়া
উত্তম।
৩. দোয়া ও ইস্তিগফার
আজকের
দিনে
বারবার
দোয়া
করা
এবং
আল্লাহর কাছে
ক্ষমা
চাওয়া।
৪. সুরা কাহাফ তিলাওয়াত
জুমার
দিনে
এই
সূরা
পাঠ
করা
বিশেষ
ফজিলতপূর্ণ।
৫. সালাত ও যিকির
আজকের
দিনে
অতিরিক্ত নফল
নামাজ,
তাসবিহ
ও
যিকির
করা।
৬. দান ও সদকা
সদকা
করলে
তা
অনেক
গুণ
সওয়াব
নিয়ে
আসে
আজকের
দিনে।
গুরুত্বপূর্ণ আয়াত ও হাদিসসমূহ (সংক্ষেপে)
- সুরা
আল-মায়েদা (৫:৩): দ্বীনের পূর্ণতা ঘোষণা
- সহিহ
মুসলিম (১১৬২): আরাফার রোজায় দুই বছরের গুনাহ মাফ
- তিরমিযি
(৮৯১): হজ হলো আরাফা
- সহিহ
মুসলিম (১৩৪৮): জাহান্নাম
থেকে মুক্তির ঘোষণা
- সহিহ
মুসলিম (৮৫৪): জুমার শ্রেষ্ঠতা
- সহিহ
বুখারি (৯৩৫): দোয়া কবুলের বিশেষ সময়
উপসংহার
আজকের
এই
দিন
আমাদের
জন্য
অনেক
বড়
একটি
নিয়ামত। আরাফা
ও
জুমা—দুইটি মহামূল্যবান দিনের
সংমিশ্রণ। যারা
হজে
নেই,
তারা
যেন
এই
দিনটিকে রোজা,
নামাজ,
দোয়া,
তিলাওয়াত, সদকা
ও
ইবাদতের মাধ্যমে পূর্ণমাত্রায় কাজে
লাগান।
যেন
এই
সুযোগের পূর্ণ
ফায়দা
নিতে
পারি।
Call
to Action
আপনি
যদি
এই
পোস্টটি উপকারী
মনে
করেন,
তাহলে
দয়া
করে
আপনার
বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের সাথে
শেয়ার
করুন।
নিচের
কমেন্টে জানাতে
পারেন—আজ আপনি কী
কী
আমল
করেছেন,
এবং
এই
পোস্ট
আপনার
জন্য
কতটুকু
সহায়ক
হয়েছে।
No comments