কুরআনের আলোকে কুরবানির গুরুত্ব ও নির্দেশনা | Qurbani in Quran
ভূমিকা
কুরবানি ইসলামের অন্যতম
গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।
প্রতিবছর জিলহজ
মাসের
১০
তারিখে
মুসলিম
উম্মাহ
ঈদুল
আজহা
পালন
করে
থাকে,
যা
কুরবানির ঈদ
হিসেবেও পরিচিত। এটি
মূলত
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের
জন্য
পশু
জবাই
করার
একটি
গুরুত্বপূর্ণ আমল।
কুরআনুল কারিমে
কুরবানির ব্যাপারে বহুবার
উল্লেখ
করা
হয়েছে।
এই
ব্লগ
পোস্টে
কুরআনের আলোকে
কুরবানির আয়াত
ও
তার
ব্যাখ্যা তুলে
ধরা
হলো।
কুরআনে কুরবানির নির্দেশনা
১. সূরা আল-কাওসার, আয়াত ২
فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ
অনুবাদ: অতএব, তোমার
প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত
আদায়
কর
এবং
কুরবানি কর।
সূরা আল-কাওসার, আয়াত ২
এই
আয়াতে
আল্লাহ্ স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, সালাত
আদায়
ও
কুরবানি করতে
হবে
কেবল
তাঁর
জন্যই।
২. সূরা আল-হাজ্জ, আয়াত ৩৭
لَنْ يَنَالَ اللَّهَ لُحُومُهَا
وَلَا دِمَاؤُهَا وَلَٰكِنْ يَنَالُهُ التَّقْوَىٰ مِنْكُمْ
অনুবাদ: তাদের গোশত
ও
রক্ত
আল্লাহ্র নিকট
পৌঁছে
না,
বরং
তোমাদের পক্ষ
থেকে
পৌঁছে
তোমাদের তাকওয়া।
সূরা আল-হাজ্জ, আয়াত ৩৭
এই
আয়াতে
আল্লাহ্ বুঝিয়ে
দিয়েছেন, কুরবানির পশুর
রক্ত
বা
মাংস
নয়,
বরং
মনের
খাঁটি
নিয়ত
এবং
আল্লাহ্ভীতি-ই
গৃহীত
হয়।
৩. সূরা আল-হাজ্জ, আয়াত ৩৬
وَالْبُدْنَ جَعَلْنَاهَا لَكُمْ مِنْ
شَعَائِرِ اللَّهِ لَكُمْ فِيهَا خَيْرٌ
অনুবাদ: কুরবানির উটগুলোকেও আমরা
তোমাদের জন্য
আল্লাহর নিদর্শন হিসেবে
নির্ধারণ করেছি।
এতে
তোমাদের জন্য
রয়েছে
কল্যাণ।
সূরা আল-হাজ্জ, আয়াত ৩৬
এই
আয়াতে
পশু
কুরবানিকে আল্লাহর নিদর্শন বলা
হয়েছে।
এর
মধ্যে
কল্যাণ
ও
বরকত
রয়েছে।
৪. সূরা আল-আন’আম, আয়াত ১৬২
قُلْ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي
وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
অনুবাদ: বলুন, নিশ্চয়ই আমার
সালাত,
আমার
কুরবানি, আমার
জীবন
ও
মৃত্যু
— সবই
আল্লাহ্, জগতসমূহের প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে।
সূরা আল-আন’আম, আয়াত ১৬২
এই
আয়াতে
একজন
মুসলমানের সার্বিক জীবন
আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে উৎসর্গ
করার
নির্দেশনা পাওয়া
যায়।
কুরবানিও এর
একটি
অংশ।
কুরবানির উদ্দেশ্য
কুরবানি একটি
প্রতীকী ইবাদত।
এর
মাধ্যমে একজন
মুসলমান আল্লাহ্র আদেশ
পালন,
তাকওয়ার প্রকাশ
এবং
মানবিক
মূল্যবোধ চর্চা
করে।
হযরত
ইব্রাহিম (আঃ)
ও
ইসমাইল
(আঃ)-এর কুরবানির ঘটনা
ইসলামের ইতিহাসে চিরস্মরণীয়। সেই
ত্যাগ
ও
আত্মসমর্পণের শিক্ষা
নিয়েই
কুরবানি পালন
করা
হয়।
কুরবানি সংক্রান্ত কিছু সাধারণ প্রশ্ন
১. কুরবানি কি ফরজ?
না,
এটি
ফরজ
নয়।
তবে
নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে এটি
ওয়াজিব। যার
ওপর
যাকাত
ওয়াজিব,
তার
ওপর
কুরবানি করাও
ওয়াজিব।
২. কুরবানি কয়দিন করা যায়?
১০,
১১
ও
১২
জিলহজ
— মোট
তিনদিন।
৩. নারী কি কুরবানি করতে পারে?
হ্যাঁ,
যদি
তিনি
নেসাব
পরিমাণ
সম্পদের মালিক
হন,
তাহলে
তার
ওপরও
কুরবানি ওয়াজিব।
কুরআনে কুরবানির শিক্ষা
১.
আল্লাহ্র জন্য
ইখলাস
বা
খাঁটি
নিয়ত
২.
তাকওয়া
অর্জন
করা
৩.
ত্যাগ
ও
আত্মসমর্পণের মানসিকতা গড়ে
তোলা
৪.
দরিদ্রদের সহায়তা
করা
৫.
হালাল
উপার্জন থেকে
কুরবানি করা
উপসংহার
কুরবানি কেবল
পশু
জবাইয়ের আনুষ্ঠানিকতা নয়;
বরং
এটি
তাকওয়া,
ত্যাগ
ও
আল্লাহ্র সন্তুষ্টির প্রতীক। কুরআনের আলোকে
কুরবানির নির্দেশনা ও
গুরুত্ব বুঝতে
পারলে
এই
ইবাদত
অনেক
গভীর
অর্থ
বহন
করে।
আমাদের
উচিত,
এই
মহান
ইবাদত
যথাযথভাবে পালন
করা
এবং
কুরআনের শিক্ষা
অনুযায়ী জীবন
গড়ে
তোলা।
No comments